LIFE OF BIN LADEN--বিশ্ব মৌলবাদী সন্ত্রাসের নেপথ্য নায়ক --বিন লাদেন জিবনের কিছু স্মৃতি কথা। পর্ব (১) - khalid Saifullah

khalid Saifullah

আল্লাহর তরবারী

Breaking

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৬

LIFE OF BIN LADEN--বিশ্ব মৌলবাদী সন্ত্রাসের নেপথ্য নায়ক --বিন লাদেন জিবনের কিছু স্মৃতি কথা। পর্ব (১)



 আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন, ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসুলিহি মুহাম্মাদিউ ওয়ালা আলিহি ওয়া আসহাবিহি আজমাঈন।



উসামা বিন মুহাম্মাদ বিন লাদেন। একজন ইসলামী চিন্তাবিদ, মহান সংস্কারক। উম্মাহর দুর্দিনের দরদী নেতা। তাঁর ব্যক্তিত্ব দুনিয়া বিমুখতার প্রতীক। লক্ষ কোটি মুসলমানের ভালোবাসার স্বর্ণমুকুট তাঁর মাথায়। মজবুত এক অদৃশ্য বন্ধনে তিনি জুড়ে আছেন প্রতিটি মুমিন হৃদয়ের সাথে। তাঁর ভালোবাসা একদিন অজ পাড়াগাঁ’য়ের মানুষকেও রাস্তায় বের করে এনেছিল। উসামার পক্ষে সে দিন তাদের বজ্রকণ্ঠ বেজে উঠেছিল। বড়দের সেই ভালোবাসা সেদিন আমাদের ছোটদের হৃদয়ও স্পর্শ করেছিল। সেই দৃশ্য এখনও আমার চোখে ভাসে। সেই কণ্ঠ এখনও আমার কানে বাজে। কিন্তু কালের কৌশলী অবিচার বহু মানুষের হৃদয়ের লালিত সেই ভালোবাসা কেড়ে নিয়েছে, মিডিয়ার অপপ্রচার বহু সংশয়ের জন্ম দিয়েছে তাদের মনে; ওসামার আঁচল যার দূষণ থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র। ওসামার প্রতি অকৃত্তিম ভালোবাসার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আমাদের এক ভাই। (হাফিযাহুল্লাহ) দীর্ঘ এক যুগ তার কেটেছে জেলখানায়। আফগানিস্তানে যখন আমেরিকার আগ্রাসন শুরু হয় তখন তিনি জেলে। বিন লাদেন তখন মিডিয়ার সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি। আমাদের দেশের বিখ্যাত একটি জাতীয় দৈনিকে শায়খকে নিয়ে এক মার্কিন গবেষকের প্রকাশিত লেখার অনুবাদ ও বিভিন্ন বিদেশী সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য ছাপা হয় ধারাবাহিকভাবে। এতে উঠে এসেছে শায়খের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ নানা দিক, যা কাফেরদের দৃষ্টিতে খারাপ হলেও একজন প্রকৃত মুমিনের গুণ। যেগুলো থেকে নিরপেক্ষ পাঠকের কাছে এটাই স্পষ্ট হবে যে, এমন মহৎ গুণাবলীর অধিকারী একজন মানুষ কখনই ‘সন্ত্রাসী’ হতে পারেন না। নিশ্চিত এটা দুশমনদের অপবাদ ও অপকৌশল মাত্র। আর এখানেই আমাদের শ্রমের স্বার্থকতা। লেখাগুলো তিনি পত্রিকার পাতা থেকে কেটে রাখেন। জেল থেকে বের হওয়ার সময় সেগুলো নিয়ে আসতে ভুলে যাননি। পরে তা পরম যন্তে রেখে দিয়েছেন। ঐ লেখাগুলো নিয়েই আমাদের এই আয়োজন, সেই অবিচার ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সামান্য প্রয়াস। লেখক শত্রুপক্ষের হলেও অনেক বাস্তব বিষয় তিনি এড়িয়ে যাননি। (তবে তার দেয়া আইএসআই সংক্রান্ত কিছু তথ্য প্রশ্নবিদ্ধ হওয়াটাই স্বাভাবিক) যাতে রয়েছে ভালোবাসার খোরাক, পত্র-পত্রিকার উড়াল খবরে আস্থাশীলদের সংশয়ের নিরসন। সাহস ও আত্মবিশ্বাসের গল্প। ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য সবকিছু বিলিয়ে দেয়ার প্রেরণা। আরো রয়েছে ... লেখকের শব্দের বুলেটগুলো নিষ্ক্রিয় করার জন্য ইসলামী পরিভাষার ব্যবহার ছাড়া তেমন কোন পরিবর্তন আমরা করিনি। এসব পরিবর্তনের আরো একটি কারণ হলো, যেন এগুলোর সাথে আমাদের পরিচিতি ঘটে; এগুলোর ভীতি বিদূরীত হয়। পৃথিবীর ইতিহাস আসলে যুদ্ধ-বিগ্রহেরই ইতিহাস। নদীর এ কূল ভেঙ্গে ও কূল গড়ার মত এক জাতি ও সভ্যতার জয় ও অপরটির পরাজয়ের চিত্রই তাতে দেখা যায়। নিজেকে একজন শান্তিকামী ভাবা, যুদ্ধ-জিহাদ থেকে নিজেকে পৃথক মনে করার অর্থ হলো, নিজের আত্মরক্ষা ও প্রতিরক্ষা সম্পর্কে উদাসীন হওয়া, পৃথিবীর মূল স্রোত থেকেই নিজেকে সরিয়ে রাখা। যে চেতনা বিন লাদেনকে রাজপ্রাসাদ থেকে পাহাড়ের গুহায় এনেছিল মুসলিম উম্মাহ সেই চেতনায় উজ্জিবীত হবে, ইসলামী খেলাফতের পতাকা উড্ডীন হবে সেদিন বেশি দূরে নয়। আল্লাহ আমাদেরকে কবুল করেন। তিনিই একমাত্র সাহায্যকারী ও তাওফিকদাতা। মেহেরবান আল্লাহ শায়খের মর্যাদা আরো অনেক বাড়িয়ে দিন। আমীন।


 অনুবাদকের কথা,


  আফগানিস্তানে আজ ঝাঁপিয়ে পড়েছে পরাশক্তি আমেরিকা। ক্ষেপণাস্ত্র আর বোমার মুহুর্মুহু আঘাতে কেঁপে উঠছে আফগনিস্তানের মাটি। ধ্বংস হচ্ছে নগর, গ্রাম, জনপদ। অকাতরে মরছে নিরীহ মানুষ। দেশটি পরিণত হয়েছে এক বিশাল রক্তাক্ত প্রান্তরে। আমেরিকার এই হামলার লক্ষ্য বাহ্যত একটাই বিশ্ব জিহাদের প্রাণপুরুষ ওসামা বিন লাদেনকে বন্দী কিংবা হত্যা করা। কিন্তু বিন লাদেন যেন প্রহেলিকা তাঁকে ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না। আফগানিস্তানের কোন নিভৃত গুহায় বসে জিহাদ আন্দোলনের জাল বুনে চলেছেন লাদেন কেউ জানে না। এক সৌদি ধনকুবেরের পুত্র কিভাবে বিশ্ব জিহাদের নেতৃত্বে আসলেন? আফগানিস্তান বিশেষজ্ঞ জেসন বার্ক এখানে বিন লাদেনের সেই বিস্ময়কর উত্থানের বিবরণ দিয়েছেন। বিন লাদেনের বিস্ময়কর উত্থানের নেপথ্যে রাতের আঁধারে ঢাকা একটি গ্রাম। সে গ্রামের আনাচে কানাচে অতন্দ্র প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে আছে রক্ষীরা। কালাসনিকভ ও রকেট লাঞ্চার হাতে সদাপ্রস্তুত । সে গ্রামের মাটি, ইট ও কাঠের তৈরি একটি বাড়ির ভিতর ধূলিময় মেঝেতে চাদর বিছিয়ে বসে আহার করলেন দু’জন লোক। ভাত, ঝলসানো মাংস আর নিরামিষ। মাথার অনেক ওপরে অন্ধকার রাতের আকাশ চিরে ছুটে চলা আমেরিকার যুদ্ধ বিমানগুলোর গর্জন শোনা যাচ্ছিল। লোক দু’টোর উভয়ের বয়স মধ্য চল্লিশের কোঠায়। শ্মশ্রুমন্ডিত। পরনে স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী ঢিলেঢালা পোশাক লম্বা জামা ও সালোয়ার। খাওয়া সেরে তারা হাত মুখ ধুলেন। নামাজ পড়লেন। তারপর বসলেন আলোচনায়। এদের একজন বিশ্বের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড ম্যান’ বলে পরিচিত ওসামা বিন লাদেন এবং অন্যজন তালেবান সরকারের প্রধান মোল্লা ওমর। তাঁদের আলোচনা করার মতো অনেক কিছুই ছিলো। নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে জিহাদী হামলার প্রতিশোধস্বরূপ কিছুদিন আগে ৩০ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ন’টায় মার্কিন ও ব্রিটিশ ক্রুজ মিসাইল আফগানিস্তানের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত হানতে শুরু করে। ফলে আফগানিস্তানজুড়ে শহর-নগর-গ্রাম-সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ নেমে এসেছে। বিন লাদেন ও মোল্লা ওমর যে গ্রামে বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন তার অনতিদূরে বেশ কয়েকটি ক্ষেপনাস্ত্র এসে পড়েছিল। আরও কয়েকটি আঘাত হেনেছিলো তালেবানদের আধ্যাত্মিক ও প্রশাসনিক ঘাঁটি দক্ষিণাঞ্চলীয় নগরী কান্দাহারে। তারা দু’জন সেখানে মিলিত হয়েছিলেন একটা সিদ্ধান্তের জন্য। হঠাৎ করেই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে এখন তাদের করণীয় কী হবে তা নির্ধারণ করাই ছিল বৈঠকের উদ্দেশ্য। উপসাগরীয় অঞ্চলের একটি গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে ব্রিটেনের ‘দ্য অবজার্ভার’ পত্রিকার প্রতিনিধি জানতে পারেন যে বৈঠক বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। না হবার অংশত কারণ ছিল নিরাপত্তার ভাবনা। একটা টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র নিখুঁত নিশানায় নিক্ষিপ্ত হলে পেন্টাগনের মূল টার্গেট এই দুই ব্যক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে পারত। বৈঠকে প্রায় সকল- বিষয়েই এ দু’জনের ঐকমত্য হয়েছিল। বৈঠক তাড়াতাড়ি শেষ হবার এটাও ছিল অংশত কারণ। মোল্লা ওমর তাঁর সৌদি বংশোদ্ভুত বন্ধুর প্রতি সমর্থন, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন। বিন লাদেনের জবাবও ছিল অনুরূপ। কৌশলগত প্রশ্নে তাঁরা দু’জনে দ্রুত একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছেন। ঠিক হলো যে, তাঁরা যৌথভাবে যে কোন আগ্রাসন প্রতিহত করবেন। তারা তাদের বিরুদ্ধে গঠিত কোয়ালিশনে বিভেদ সৃষ্টির জন্য কাজ করবেন এবং সেই বিভেদের সদ্ব্যবহার করবেন এবং তারা বোমা হামলার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ক্ষোভ ও প্রতিবাদের জোয়ার সৃষ্টির জন্য মানবিক সঙ্কটকে, বিশেষ করে নিরীহ অসামরিক জনগোষ্ঠীর হতাহতের ঘটনাগুলো কাজে লাগাবেন। বৈঠক শেষে তারা পরস্পর কোলাকুলি করে যে যার পথে প্রস্থান করেন। তারপর থেকে তাদের মধ্যে আর বৈঠক হয়নি বলে ধারণা করা হয়। যে মানুষটিকে জীবিত ধরার অথবা হত্যা করার জন্য আজ আমেরিকা তার প্রায় গোটা সামরিক শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সেই ওসামা বিন লাদেনের জীবনচিত্র পেতে হলে ফিরে যেতে হবে ১৯৩০ সালে ইয়েমেনের দারিদ্র্যপীড়িত প্রদেশ হাদ্রামাউতে। সেখানে একজন ডক শ্রমিককে চোখে পড়বে। ছ’ফুট লম্বা, বলিষ্ঠ গড়ন তবে এক চোখ অন্ধ এই মানুষটি একদিন অনেক ভেবে ঠিক করলেন যে, বন্দরে বন্দরে জাহাজে মাল বোঝাইয়ের কাজ ছাড়াও জীবনে আরও অনেক কিছু করার আছে। -------চলমান

কোন মন্তব্য নেই:

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages