ভিত্তিহীন আকীদা
১. গায়রুল্লাহর জন্য ইলমে গায়েবের আকীদা
আহলে হকের আকীদা হচ্ছে, আলিমুল গাইব অর্থাৎ অদৃশ্য জগতের বিষয়াদি সম্পর্কে জ্ঞাত একমাত্র আল্লাহ তাআলা। তাঁর জন্য অদৃশ্য বলতে কিছুই নেই। দৃশ্য-অদৃশ্যের পার্থক্য মাখলুকের জন্য। আল্লাহ সমানভাবে আলিমুল গাইব ও আলিমুশ শাহাদাহ। প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সবকিছুই তাঁর কাছে প্রকাশ্য। ইলমে যাতী ও ইলমে মুহীত তথা নিজস্ব ও সর্বব্যাপী ইলম একমাত্র আল্লাহ পাকেরই। আল্লাহ তাআলা ছাড়া আর কেউ এ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী নয়। তবে নবী-রাসূলগণকে আল্লাহ তাআলা ওহীর মাধ্যমে অদৃশ্য জগতের বহু জ্ঞান দান করেছেন। আর নবীগণের মধ্যে সাইয়েদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, খাতামাতুন্নাবিয়্যীন হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাকাম এ বিষয়ে সকলের ঊর্ধ্বে। আল্লাহ পাক তাঁকে যে জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দান করেছেন সমষ্টিগতভাবে অন্য কোনো রাসূলকেও তা দান করা হয়নি। কিন্তু এরপরও এ কথা বলার অবকাশ নেই যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলিমুল গাইব ছিলেন বা “ভবিষ্যতে যা হবে ও অতীতে যা হয়েছে সকল বিষয়ে তিনি জ্ঞাত ছিলেন। তাঁর সামনে যা ঘটত তা যেমন তিনি জানতেন, দূরের-কাছের অন্য সবকিছুই জানতেন; যা ওহী আসত তা যেমন জানতেন, যা ওহী হত না তাও তেমনি জানতেন”!! কারণ, এ তো হবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহর বিশেষ সিফাতের মধ্যে শরীক করা এবং কুরআন ও সুন্নাহর স্পষ্ট বিরুদ্ধাচরণ। কেননা কুরআনে কারীম থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, আলিমুল গাইব একমাত্র আল্লাহ পাকেরই গুণবাচক নাম। তেমনি অসংখ্য আয়াত ও হাদীস দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত যে, অতীত ও ভবিষ্যতের অনেক কিছু আল্লাহ পাক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানাননি। কারণ, ঐসব বিষয় তার নবুওত ও রেসালাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। যেমন কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত কোনো আয়াত বা সূরা তাঁর কাছে ওহীরূপে আসার পূর্বে তা তাঁর জানা ছিল না। উল্লেখিত সহীহ আকীদার উপর মাওলানা মনযূর নোমানী রাহ. লিখিত ‘বাওয়ারিকুল গায়েব’গ্রন্থের প্রথম খণ্ডে একটি দুটি নয়, চল্লিশটি আয়াতে কারীমা অনুবাদ ও ব্যাখ্যাসহ উল্লেখ করা হয়েছে। এবং ঐ গ্রন্থের দ্বিতীয় খণ্ডে উপরোক্ত সহীহ আকীদার পক্ষে একশ পঞ্চাশ খানা হাদীস অনুবাদ ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণসহ উল্লেখ করা হয়েছে। তাছাড়া এই বিষয়ে হযরত মাওলানা সরফরায খান সফদার রাহ.-এর কিতাব ‘ইযালাতুর রাইব আন ইলমিল গাইব’ তো আলেমদের হাতে আছেই।
উল্লেখিত ঈমানী আকীদার সম্পূর্ণ বিপরীত বেরলভীদের আকীদা হচ্ছে- দৃশ্য-অদৃশ্য সকল কিছুর ইলম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেয়া হয়েছে। একই সাথে অতীতে যা কিছু হয়েছে ও কিয়ামত পর্যন্ত ভবিষ্যতে যা কিছু হবে সব বিষয়ে তিনি সম্যক অবগত ছিলেন! সৃষ্টির সূচনা থেকে জান্নাত জাহান্নামে প্রবেশ পর্যন্ত সামান্যতম বিষয়ও তার জ্ঞানের বহির্ভূত ছিল না। উক্ত বাতিল আকীদা প্রচারের জন্য স্বয়ং আহমদ রেযা খান একাধিক বই লিখেছে। যেমন ‘ইম্বাউল মুস্তফা’ ও ‘আদ দাওলাতুল মাক্কিয়াহ বিল মাদ্দাতিল গাইবিয়্যাহ’। আরো দেখা যায়, প্রসিদ্ধ বেরলভী আলেম মৌলভী নাঈমুদ্দীন মুরাদাবাদী রচিত ‘আলকালিমাতুল উল্য়া’ পৃ. ৩, ৪৩, ও ৬৩। এবং কাজী ফযল আহমদ লুধিয়ানভী রচিত ‘আনওয়ারে আফতাবে সাদাকাত’ পৃ. ১৩৭
২. হাযির-নাযির শীর্ষক আকীদা
পরিভাষায় হাযির-নাযির ঐ সত্তাকে বলে যার শক্তি ও জ্ঞান সর্বাবস্থায় সকল স্থানকে বেষ্টন করে আছে। কোনো কিছু তাঁর ইলম ও কুদরতের বাইরে নয়। তিনি সকল কিছু দেখেন। কোনো কিছুই তাঁর দৃষ্টির আড়ালে থাকতে পারে না। এমন সত্তা একমাত্র আল্লাহ তাআলা । এটি অতি স্পষ্ট ও অকাট্য এবং কুরআন-হাদীসের অসংখ্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত। এ কারণে উল্লেখিত অর্থে আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে হাযির-নাযির মনে করা সুস্পষ্ট ভ্রান্তি ও শিরকী আকীদা। এই আকীদার ভ্রান্তি ও ভিত্তিহীনতা বোঝার জন্য দেখা যেতে পারে মাওলানা সরফরায খান লিখিত কুরআন ও হাদীসের দলীলসমূহের এক উত্তম সংকলন ‘তাবরীদুন নাওয়াযির ফী তাহকীকিল হাযির ওয়ান নাযির’।
কিন্তু আফসোস, বেরলভীরা উল্লেখিত শিরকী আকীদার প্রবক্তা। তারা শুধু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেই নয়, বুযুর্গানে দ্বীনকেও হাযির-নাযির মানে।
মশহুর বেরলভী আলেম আহমদ ইয়ার খান লিখেন,
عالم میں حاضر و ناظر کے شرعی معنی یہ ہے کہ قوت قدسیہ والا ایک ہی جگہ رہ کر تمام عالم کو اپنے کف دست کی طرح دیکھے اور دور و قریب کی آوازیں سنے یا ایک آن میں تمام عالم کو سیر کرے اور صدہا کوس پر حاجت مندوں کی حاجت روائی کرے، یہ رفتار خواہ صرف روحانی ہو یا جسم مثالی کے ساتھ ہو یا ایسی جسم سے ہو جو قبر میں مدفون ہو یا کسی جگہ موجود ہے ان سب معنے کا ثبوت بزرگان دین کے لۓ قرآن و احادیث اور اقوال علماء سے ہے. (جاء الحق ج১ ص ১৩১ )
অর্থাৎ, জগতে হাযির-নাযির থাকার শরয়ী অর্থ হচ্ছে, পবিত্র শক্তির অধিকারী কোনো সত্তা একই স্থানে অবস্থান করে সমস্ত দুনিয়াকে নিজের হাতের তালুর মত দেখেন। দূরের ও কাছের সমস্ত আওয়ায শোনেন। আবার মুহূর্তের মাঝে সমস্ত পৃথিবী ভ্রমণ করতে পারেন। শত শত মাইল দূর থেকে প্রয়োজনগ্রস্তের প্রয়োজন পূরণ করেন। এ ভ্রমণ শুধু রুহানীভাবে হোক অথবা মিছালী দেহের সাথে, অথবা এমন দেহের সাথে যা কোনো কবরে সমাহিত বা কোনো স্থানে মওজুদ। হাযির-নাযিরের উল্লেখিত অর্থ কুরআন হাদীস ও উলামায়ে কেরামের বিভিন্ন উক্তির মাধ্যমে বুযুর্গানে দ্বীনের জন্য প্রমাণিত। (জা-আল্ হক, আহমদ ইয়ার খান, খ. ১ পৃ. ১৩১ )
সম্মানিত পাঠক লক্ষ করুন, উল্লেখিত ভ্র্রান্ত আকীদাকে কীভাবে কুরআন হাদীস ও উলামায়ে কেরামের উক্তির উপর আরোপ করে দেওয়া হল,
سُبْحٰنَكَ هٰذَا بُهْتَانٌ عَظِیْمٌ.
৩. মোখতারে কুল শীর্ষক আকীদা
ইসলামের সুস্পষ্ট ও সর্বজন বিদিত একটি আকীদা, যার পক্ষে যুক্তিভিত্তিক প্রমাণাদী ছাড়াও অনেক আয়াত ও হাদীসের স্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে, তা এই যে, সৃষ্টিজগতের সকল কিছুর মালিক-মোখতার একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। কিন্তু বেরলভী জামাতের আকীদা এর সম্পূর্ণ বিপরীত। তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মোখতারে কুল মনে করে।
আহমদ রেযা খান লিখেছেন,
حضور ہر قسم کی حاجت روائی فرما سکتے ہیں، دنیا و آخرت کی مرادیں سب حضور کے اختیار میں ہیں. (برکات الإمداد لأهل الاستمداد ص (৮০
অর্থাৎ হুযুর সকল প্রকার প্রয়োজন মিটাতে সক্ষম। দুনিয়া-আখিরাতের সকল মকসুদ ও উদ্দেশ্য তাঁরই ইখতিয়ারাধীন। -বারাকাতুল ইমদাদ লিআহলিল ইসতিমদাদ, আহমদ রেযা খান পৃ. ৮
আরো বলেছেন-
رب العزۃ جل جلالہ نے اپنے کرم کے خزانے اپنی نعمتوں کے خوان حضور کے قبضے ميں دۓ جس کو چاہیں دیں اور جس کو چاہیں نہ دیں ، کوئی حکم نافذ نہیں ہوتا مگر حضور کے دربار سے، کوئی نعمت کوئی دولت کسی کو کبھی نہیں ملتی مگر حضور کی سرکار سے صلے اللہ علیہ و سلم ( ملفوظات ج ৪ ص ৭০-৭১ )
অর্থাৎ মহাপরাক্রমশালী প্রভু আপন দানের ভা-ার নিআমতের খাযানা হুযুরের কব্জায় দিয়ে দিয়েছেন। তিনি যাকে ইচ্ছা দিবেন যাকে ইচ্ছা দিবেন না। সমস্ত ফায়সালা কার্যকর হয় একমাত্র হুযুরের দরবার থেকেই। আর যে কেউ যখনই কোনো নিআমত কোনো দৌলত পায় তা পায় হুযুরের রাজ-ফরমান থেকেই। -মালফুজাত, আহমদ রেযা খান খ. ৪ পৃ. ৭০-৭১
আহমদ রেযা খান সাহেবের উপরোক্ত বাক্যগুলো পড়–ন, এরপর কুরআনে কারীমের আয়াতসমূহের উপর চিন্তা করুন। দেখুন কুরআন কী বলে আর আহমদ রেযা খান সাহেব কী বলেন!
قُلْ اِنَّمَاۤ اَدْعُوْا رَبِّیْ وَ لَاۤ اُشْرِكُ بِهٖۤ اَحَدًا قُلْ اِنِّیْ لَاۤ اَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَّ لَا رَشَدًا قُلْ اِنِّیْ لَنْ یُّجِیْرَنِیْ مِنَ اللهِ اَحَدٌ وَّ لَنْ اَجِدَ مِنْ دُوْنِهٖ مُلْتَحَدًا اِلَّا بَلٰغًا مِّنَ اللهِ وَ رِسٰلٰتِهٖ ؕ وَ مَنْ یَّعْصِ اللهَ وَ رَسُوْلَهٗ فَاِنَّ لَهٗ نَارَ جَهَنَّمَ خٰلِدِیْنَ فِیْهَاۤ اَبَدًا.
বলে দাও, আমি তো কেবল আমার প্রতিপালকের ইবাদত করি এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করি না। বলুন, আমি মালিক নই তোমাদের ক্ষতি সাধনের আর না সুপথে আনয়নের। বলে দাও, আল্লাহ থেকে কেউ আমাকে রক্ষা করতে পারবে না আর আমিও তাকে ছাড়া আর কোনো আশ্রয়স্থল পাব না। অবশ্য (আমাকে যে জিনিসের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে, তা হল) আল্লাহর পক্ষ থেকে বার্তা পৌঁছানো ও তাঁর বাণী প্রচার। কেউ আল্লাহ ও তার রাসূলের অবাধ্যতা করলে তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন। যেখানে তারা স্থায়ীভাবে থাকবে। -সূরা জিন (৭২) : ২০-২৩
২. قُلْ لَّا أَقُولُ لَكُمْ عِنْدِيْ خَزَائِنُ الله.ِ
বলুন, আমি তোমাদের বলি না যে, আমার কাছে রয়েছে আল্লাহর ভা-ারসমূহ। -সূরা আনআম (৬) : ৫০
৩. قُلْ لَّا أَمْلِكُ لِنَفْسِي نَفْعًا وَّلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَاءَ اللهُ وَلَوْ كُنْتُ أَعْلَمُ الْغَيْبَ لَاسْتَكْثَرْتُ مِنَ الْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِيَ السُّوءُ إِنْ أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ وَّبَشِيرٌ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُون.َ
বলুন, আমি আমার নিজের ভাল-মন্দের মালিক নই; কিন্তু আল্লাহ যা চান। আমি যদি গায়েব জানতাম তবে প্রচুর ভাল-ভাল জিনিস নিয়ে নিতাম এবং কোনো কষ্ট আমাকে স্পর্শ করত না। আমি তো কেবল একজন সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা- যারা আমার কথা মানে তাদের জন্য। -সূরা আরাফ (৭) : ১৮৮
৪. اِنَّكَ لَا تَهْدِیْ مَنْ اَحْبَبْتَ وَ لٰكِنَّ اللهَ یَهْدِیْ مَنْ یَّشَاء ُوَ هُوَ اَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِیْنَ.
তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সৎপথে আনয়ন করেন এবং তিনিই ভাল জানেন সৎপথ অনুসারীগণকে। -সূরা কাসাস (২৮) : ৫৬
বেরলভী জামাত শুধু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেই নয়, অনেক বুযুর্গানে দ্বীনকেও মোখতারে কুল ও কুন ফায়াকুনের অধিকারী মনে করে। এ প্রসঙ্গে আহমদ রেযা খানের পুত্র মুস্তফা রেযা খান লেখেন-
اولیاء میں ایک مرتبہ ہے التکوین کا جو چیز جس وقت چاہتے ہیں فورا ہو جا تی ہے ، جسے کن کہا وہی ہو گیا (شرح استمداد ص ২৮ )
অর্থাৎ আউলিয়ায়ে কেরামের একটি মাকাম হচ্ছে আসহাবে ‘তাকভীন’গণের মাকাম। তারা যখন যা ইচ্ছা করেন তৎক্ষণাত তা হয়ে যায়। যে সম্পর্কেই ‘কুন’ ‘হও’ বলেন তা-ই হয়ে যায়। -শরহে ইসতিমদাদ পৃ. ২৮
বরং খোদ আহমদ রেযা খান শায়েখ আব্দুল কাদির জিলানী রাহ. সম্পর্কে লিখেছেন-
ذی تصرف بھی ، ماذون بھی، مختار بھی
کار عالم کا مدبر بھی عبد القادر
অর্থাৎ শায়েখ আব্দুল কাদের জিলানী সৃষ্টির উপর কর্তৃত্বের অধিকারী। অনুমতি প্রাপ্ত ও ইচ্ছা-ইখতিয়ারের অধিকারী এবং জগতের কার্যাবলীর পরিচালকও। -হাদায়েকে বখশিশ, আহমদ রেযা খান ১ : ২৭
বেরলভী জামাত যেহেতু গায়রুল্লাহকে মোখতারে কুল তথা সর্বক্ষমতার অধিকারী মনে করে তাই গায়রুল্লাহকে প্রয়োজন পূরণকারী ও বিপদ-আপদ বিদূরণকারী বলেও বিশ্বাস করে, তাই তারা উপায় উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়েও মৃত ও জীবিত বুযুর্গদের কাছে প্রার্থনা ও ফরিয়াদ করাকে জায়েয মনে করে, যা “إياك نستعين”-এর মধ্যে ঘোষিত ‘তাওহীদুল ইসতিআনাহ’-এর পরিপন্থী স্পষ্ট র্শিক। তাদের এই শিরকী আকীদার উল্লেখ আহমদ রেযা খানের ‘আল আমনু ওয়াল উলা’ (الأمن والعلى لناعتي المصطفى بدافع البلاء) এবং মুস্তফা রেযা খানের ‘শরহে ইসতিমদাদ’ ইত্যাদি বইপত্রে রয়েছে।
৪. নূর-বাশার শীর্ষক আকীদা
কুরআনে কারীমের ঘোষণা ও ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বাস্তবতা এই যে, আল্লাহর রাসূল বাশার তথা মানব ছিলেন। তবে তিনি ছিলেন সাইয়েদুল বাশার মানবকুল শিরোমণি। আল্লাহ পাক তাঁকে হেদায়েতের নূর ও ‘সিরাজুম মুনীর’ রূপে প্রেরণ করেছেন। কিন্তু বেরলভী জনসাধারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মানবসত্তার অস্বীকারকারী। তাদের আকীদা- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সত্তাকে নূর দ্বারা তৈরি করা হয়েছে, যা কুরআন-হাদীসের ঘোষণার সম্পূর্ণ বিরোধী।
এ সম্পর্কে সহীহ আকীদ জানতে দেখুন :
মাওলানা সরফরায খান রচিত ‘নূর ও বাশার’। মাওলানা আবদুল মাজেদ দরিয়াবাদী কৃত ‘বাশারিয়্যাতে আম্বিয়া কুরআন মাজীদ মে’, সাইয়েদ লাল শাহ বুখারীর ‘বাশারিয়্যাতে রাসূল’ ও মাওলানা মতিউর রহমানের ‘প্রচলিত জাল হাদীস’।
৫. কবর পূজা ও অন্যান্য র্শিক
বেরলভী জনসাধারণের একটি বড় অংশ মাজার পূজারী। বেরলভী সম্প্রদায়ের আলেমরা তাদের জনসাধারণকে যখন এই সবক দিয়েছে যে, প্রত্যেক বুযুর্গই হাযির-নাযির । মোখতারে কুল। হাজত পূরণকারী ও বিপদাপদ বিদূরণকারী। তখন তারা মনোবাঞ্ছা পূরণের জন্য ও বালা মসিবত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বুযুর্গানে দ্বীনের কবরে তাওয়াফ ও সেজদা২[2] কবরওয়ালার কাছে প্রার্থনা ও ফরিয়াদ, তাদের নাম জপা, গায়রুল্লাহর নামে মান্নত মানা, এবং গায়রুল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য পশু কুরবানীর মতো প্রকাশ্য শিরকী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে।
উল্লেখিত কর্মগুলো শিরক হওয়া দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট। এ বিষয়ে কুরআন হাদীসের প্রমাণাদী জানার জন্য নিম্নোক্ত গ্রন্থাবলী দ্রষ্টব্য :
মাওলানা মনযুর নোমানী রাহ. লিখিত ‘কুরআন আপসে কিয়া কাহতা হ্যায়’ ও ‘দ্বীন ও শরীয়ত’। মাওলানা সরফরায খান লিখিত ‘ইতমামুল বুরহান ফী রদ্দি তাউযীহুল বয়ান’ ও ‘রাহে সুন্নাত’। এই অধম লিখিত ‘তাসাউফ তত্ত্ব ও বিশ্লেষণ’
ভ্রান্ত ধ্যানধারণা
উল্লেখিত ভিত্তিহীন আকীদাগুলো ছাড়াও যে সকল ভ্রান্ত ধারণার উপর বেরলভী চিন্তা-ঘরানার ভিত্তি তন্মধ্যে শুধু একটি মৌলিক ভ্রান্তি উল্লেখ করা হচ্ছে। আর তা হচ্ছে বিদআতের সংজ্ঞার তাহরীফ ও বিকৃতি। এই বিকৃতি সাধনের কারণে বেরলভী জামাতের আলেমগণ বিদআত ও কুসংস্কারের পক্ষের দলে পরিণত হয়েছেন।
খায়রুল কুরুন তথা সাহাবায়ে কেরাম তাবিঈন ও তাবে তাবিঈনের সোনালী যুগ থেকে আজ পর্যন্ত বিদআতের যে সংজ্ঞা ও পরিচয় প্রতিষ্ঠিত তা হচ্ছে, শরঈ দলীল-প্রমাণ দ্বারা যে বিষয়টি দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত হওয়া প্রমাণিত নয় এমন কিছুকে দ্বীনের হুকুম মনে করে করার নামই বিদআত। বিষয়টি আকাইদ সংক্রান্ত হোক বা ইবাদত সংক্রান্ত, অথবা ইবাদতের সময় ও পদ্ধতি সংক্রান্ত হোক, কিংবা তা হোক দ্বীনের অন্য কোনো শাখার সাথে সম্পৃক্ত কোনো বিষয়। (দ্র. আল ই‘তিসাম, শাতেবী; আল মাদখাল, ইবনুল হাজ্জ; মেরকাত, মোল্লা আলী কারী; রাহে সুন্নাত, সরফরায খান; মুতালাআয়ে বেরলভিয়্যাত, খালেদ মাহমুদ; ইখতেলাফে উম্মত আওর সিরাতে মুস্তাকীম, মুহাম্মাদ ইউসুফ লুধিয়ানবী)
কিন্তু আহমদ রেযা খান ও তার সহযোগী মৌলভীরা এই সংজ্ঞা এভাবে বিকৃত করেছেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো আকীদা, ইবাদাত অথবা ইবাদাতের বিশেষ কোনো পদ্ধতি নিষিদ্ধ হওয়ার উপর কোনো আয়াত বা হাদীস না থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত এমন বিষয়কে দ্বীনের হুকুম সাব্যস্ত করতে অসুবিধা নেই। এবং এটাকে বিদআত বলারও অবকাশ নেই।
[আল আমনু ওয়াল উলা, আহমদ রেযা খান, পৃ. ১৫৭-১৫৮; জা-আল হক, মুফতী আহমাদ ইয়ার খান খ. ১ পৃ. ২৩০, ২৫৩, ২৫৪; ইশতেহারে আতইয়াব, মুফতী নাঈমুদ্দীন মুরাদাবাদী পৃ. ১৯ (মুতালাআয়ে বেরলভিয়্যাত খ. ৩ পৃ. ২১৫-৩৩৮-এর মাধ্যমে)]
অথচ যা কিছু নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে আয়াত বা হাদীস থাকবে তা তো হারাম বা মাকরূহে তাহরিমী হবে। বিদআত তো নিষিদ্ধ এই জন্য যে শরঈ দলীল ছাড়া একে শরীয়তের অংশ সাব্যস্ত করা হয়েছে । বেরলভী সম্প্রদায় বিদআতের যে সংজ্ঞা দিয়েছে তা সরাসরি হাদীসের খেলাফ। হাদীসে বর্ণিত হচ্ছে-
مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ.
অর্থাৎ যে কেউ দ্বীন নয় এমন কিছুকে আমাদের এই দ্বীনে অন্তর্ভুক্ত করলে তা পরিত্যাজ্য। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২৬৯৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭১৮
বিদআত ও কুসংস্কারের পক্ষপাত
বেরলভী উলামা মাশায়েখের প্রধান কীর্তি সম্ভবত এটাই যে, তারা দ্বীনের বিষয়ে এই নতুন নিয়ম উদ্ভাবনের মাধ্যমে (অর্থাৎ কোনো কিছু বিদআত বলার জন্য তার নিষিদ্ধতার উপর স্বতন্ত্র আয়াত বা হাদীস থাকা চাই), শরঈ প্রমাণাদীর তাহরীফ ও বিকৃতির মাধ্যমে, শরঈ উসূল ও মৌলনীতিকে পদদলিত করে এবং ভিত্তিহীন ও অবাস্তব কিছু বর্ণনার আশ্রয় নিয়ে সমাজে প্রচলিত বিদআত রসম-রেওয়ায এবং মুনকার ও গর্হিত কর্মকাণ্ডের পক্ষে জোরদার ভূমিকা গ্রহণ করেছে এবং এগুলোকে ইলমী সনদ দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। যে সমস্ত বিদআতকে তারা মুবাহ-মুসতাহসান বলে সমাজে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে তার তালিকা অনেক দীর্ঘ। এখানে নিম্নে নমুনাস্বরূপ কিছু বিষয় তুলে ধরা হল।
১. ঈদে মিলাদুন্নবী নামে ইসলামে নতুন ঈদের আবিষ্কার।
২. রসমী মিলাদকেই দ্বীন মনে করা।
৩. উরস করা।
৪. মাজার পাকা করা ও তার উপর গম্বুজ নির্মাণ করা।
৫. কবরে বাতি জ্বালানো।
৬. কবরের উপর চাদর বিছানো ও ফুল ছড়ানো।
৭. মাযারে এক ধরনের মু‘তাকিফ বনে থাকা।
৮. জানাযার পরে দুআর রসম।
৯. কবরের উপরে আযান দেওয়ার রসম।
১০. আযান ও ইকামতে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ’ বলার সময় বৃদ্ধাঙ্গুল চুম্বন করে উভয় চোখে লাগানো।
১১. ঈসালে সাওয়াবের জন্য কুরআনে কারীম তিলাওয়াত করে বিনিময় গ্রহণ করাকে বৈধ মনে করা।
১২. খাবার সামনে নিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে ফাতেহা পড়ার রসম।
১৩. আযানের পূর্বে দুরূদ ও সালামের রসম।
বেরলভী উলামা ও মাশায়েখের কিতাবাদী উল্লেখিত বেদআতসমূহের পক্ষপাতপূর্ণ। এর অধিকাংশ বিষয়ের উল্লেখ তো তাদের প্রসিদ্ধ বই ‘জা-আল হকে’ রয়েছে। এ ছাড়াও মৌলভী আব্দুস সামী‘ সাহেবের লেখা ‘আনওয়ারে সাতেআ’ও দেখা যেতে পারে। আর ঐ সমস্ত বিষয় বিদআত হওয়ার প্রমাণাদী জানতে চাইলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের কিতাবাদী দেখুন। উদাহরণস্বরূপ :
১. আল জুন্নাহ্ লি আহলিস সুন্নাহ, মুফতী আব্দুল গণি, সাবেক ছদরে মুদাররিস, মাদারাসায়ে আমিনীয়া দিল্লী।
২. বারাহীনে কাতিআহ, মাওলানা খলীল আহমাদ সাহারানপুরী।
৩. ইসলাহুর রুসূম, মাওলানা আশরাফ আলী থানভী।
৪. রাহে সুন্নাত, মাওলানা সরফরায খান।
৫. ইখতেলাফে উম্মত আওর সিরাতে মুস্তাকীম, মাওলানা মুহাম্মদ ইউসুফ লুধিয়ানবী।
আকাবিরে দ্বীনকে কাফের আখ্যা দেওয়া এবং মুসলমানদের মাঝে বিভেদ-বিভক্তির অপপ্রয়াস
আহমদ রেযা খান বেরলভী সাহেব যে ঘৃণ্য কাজগুলো করেছেন সেগুলোর অন্যতম হল, আকাবিরে উম্মতকে কাফের আখ্যায়িত করা। মুসলমানদের বিভক্ত করার এবং না জানি আরো কী কী ইচ্ছা ও উদ্দেশ্যে আকাবিরে উম্মতকে কাফের আখ্যা দেওয়ার তার প্রবল আগ্রহ ছিল এবং এটি তার জীবনের অতি স্পষ্ট ব্যস্ততা ছিলো।
সুতরাং কোনো ভুল বুঝাবুঝির কারণে নয়, বরং জেনে শুনে নিতান্তই হঠকারিতার বশবর্তী হয়ে হযরত মাওলানা ইসমাঈল শহীদ রাহ., মাওলানা কাসেম নানুতবী রাহ., মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী রাহ. ও মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রাহ. প্রমুখ আকাবিরে উম্মতকে কাফের আখ্যায়িত করেন। এই সমস্ত বুজুর্গানে দ্বীনের জীবনে তো কুফুরীর গন্ধ আসে এরূপ কোনো কিছুই ছিল না। এরপরও কীভাবে তিনি এমন ব্যক্তিদের কাফের বলতে পারেন?
তাকে এর জন্য মিথ্যাচার ও বিকৃতির আশ্রয় নিতে হয়েছে। আকাবিরে উম্মতের কথাগুলো কাটছাঁট করে, নিজের পক্ষ থেকে কুফুরী বাক্য বানিয়ে তাদের সাথে সম্বন্ধ করে ‘হুসামুল হারামাইন’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেছে, যার প্রতিবাদে আকাবিরে দ্বীন ‘আল মুহান্নাদ আলাল মুফান্নাদ’ নামক ঐতিহাসিক গ্রন্থ রচনা করেন এবং খান সাহেবের মিথ্যাচার ও বিকৃতিসমূহ উম্মোচিত করে দেন।
আল্লামা খালেদ মাহমুদ সাহেবের লেখা ‘ইবারতে আকাবির’, মাওলানা সরফরায খানের ‘ইবারতে আকাবির’, মাওলানা মনযুর নোমানীর ‘মারেকাতুল কলম’ বা ‘ফায়সাল কুন মুনাযারা’। মাওলানা মুরতাযা হাসান চাঁদপুরীর অনেকগুলো পুস্তিকা ও হাকীমুল উম্মত মাওলানা থানবী রাহ.-এর ‘বাসতুল বানান’ ও ‘তাগয়িরুল উনওয়ান’ প্রভৃতি কিতাব এ প্রসঙ্গে লিখিত। যেগুলোতে খান বেরলভীর তাকফীরী কর্মকাণ্ডের পর্যালোচনা অত্যন্ত ইল্ম ও ইনসাফ ভিত্তিক করা হয়েছে এবং দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, আকাবিরে উম্মতকে কাফের বলার ক্ষেত্রে আহমদ রেযা খান ছিলেন মিথ্যা অপবাদ আরোপকারী ও বিকৃতি সাধনকারী। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, এখনও বেরলভী জনসাধারণ আকাবিরে উম্মতকে কাফের বলে নিজেদের দ্বীন ঈমান বরবাদ করছে।
এ সংক্ষিপ্ত তালিকায় কয়েকটি মাত্র বিষয়ের উল্লেখ করা হল। বেরলভী মতবাদ সম্পর্কে আরো অধিক জানতে হলে পড়তে পারেন ডা. খালেদ মাহমুদ লিখিত ‘মুতালাআয়ে বেরলভিয়্যাত’ যা অনেক আগেই ছেপে এসেছে। এ গ্রন্থটি বেরলভী মতবাদ সম্পর্কে একটি বিশ্বকোষ যা ঐতিহাসিক তথ্য ও প্রমাণ সমৃদ্ধ।
আর زلزله বইয়ের মিথ্যা অপবাদসমূহের স্বরূপ জানার জন্য পড়ুন : মাওলানা মুহাম্মাদ আরেফ সাম্ভলী নদভী কৃত
بريلوي فتنہ كا نيا روپ
উল্লেখ্য, বেরলভী ঘরানার কোনো কোনো আলেম এসব শিরক ও বিদআতের অনেক কিছুরই প্রতিবাদ করেছেন। কিন্তু বেরলভী জনসাধারণের উপর তাদের বিশেষ কোনো প্রভাব লক্ষ করা যায় না। কত ভালো হত যদি অন্যান্য বেরলভী আলেমগণও এ আলেমগণের সমর্থন করতেন এবং তাদের চিন্তাগুলো প্রচার করার চেষ্টা করতেন। এ প্রসঙ্গে আমরা পাকিস্তানের বেরলভী ঘরানার প্রসিদ্ধ প্রতিষ্ঠান দারুল উলূম নাঈমিয়া করাচীর শাইখুল হাদীস আল্লামা গোলাম রাসূল সাঈদীর কথা উল্লেখ করতে পারি। তার কিতাব শরহে সহীহ মুসলিম সাত খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। এতে তিনি ‘ইলমে গাইব’, ‘নূর ও বাশার’, ‘গায়রুল্লাহর জন্য মান্নত’ ইত্যাদি বিষয়ে বেরলভীদের মাঝে প্রচলিত ধ্যানধারণার বিপরীত মতামতকেই দলীলসহ সমর্থন করেছেন।
وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين
টীকা :
[1] ইমাম মুজাহিদ হযরত মাওলানা সায়্যেদ আহমাদ শহীদ বেরলভী (জন্ম ১২০১ হি.- শাহাদত ১২৪৬ হি.) রায়বেরেলীর অধিবাসী ছিলেন। এজন্য তিনিও ‘বেরলভী’বলে প্রসিদ্ধ। কিন্তু আহমদ রেযা খান সাহেব (জন্ম: ১২৭২ হি. মোতাবেক ১৮৫৬ খৃ. মৃত্যু: ১৩৪০ হি. মোতাবেক ১৯২১ খৃ.) রায়বেরেলীর নয় বরং ‘বেরেলীর’অধিবাসী ছিলেন। তাকে বেরলভী বলা হয় বেরেলী এলাকার হিসেবে। বেরলভী জামাত তারই অনুসারী। (আবদুল মালেক)
[2] ২ গায়রুল্লাহর জন্য ‘সিজদায়ে তাহিয়্যা’ বা সম্মানের সেজদা হারাম হওয়ার বিষয়ে আহমদ রেযা খান সাহেবের স্বতন্ত্র পুস্তিকা রয়েছে। যার নাম الزبدة الزكية لتحريم سجود التحية কিন্তু এ পুস্তিকার কোনো প্রভাব মাযারপন্থী বেরলভীদের মাঝে পরিলক্ষিত হয় না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন