Ad Code

Responsive Advertisement

সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

নফসের ধোকা ও তার কোড়বাণি

আপনি যতবার অন্যায়ভাবে আপন প্রবৃত্তির খায়েশ মেটাবেন, হোক সে ট্যারা চোখে গাইর-মাহরাম নারীর দিকে তাকানো অথবা মোবাইল বা টেলিভিশন বা ল্যাপটপের পর্দায় তাকিয়ে থেকে স্বল্পবসনা চরিত্রহীন নারীদের দেহের বিভঙ্গ দেখা, অথবা কোন কিছু অন্যায়ভাবে ভোগ করা। আপনি আপনার চাহিদাকে হারাম উপায়ে পূরণ করবেন, কিংবা যতবার অন্যায়ভাবে প্রবৃত্তির চাওয়া পূরণ করবেন, আপনি কিন্তু প্রতিনিয়ত আপনাকেই ধ্বংস করছেন।
প্রতিটি কামনা ও বাসনার প্রতি সাড়া আপনাকে নামিয়ে দিবে নিচে। আপনি বুঝতে পারবেন আপনার মনুষ্যত্বের পতন। আপনার নামাজে মনোযোগ কমে যাবে, ইবাদতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন, কুরআনের আয়াত শুনে অন্তরে তার কোন প্রভাব পড়বেনা, আল্লাহর কাছে কাঁদতে পারবেন না, হৃদয় পাপে শক্ত হয়ে যেতে থাকবে, হারাম থেকে বেচে থাকা কঠিন মনে হবে। আপনি শয়তানের ধোঁকায় পড়ে প্রতিনিয়ত এইভাবেই নিজের জীবন ও ঈমানকে ক্রমশ ধ্বংস করতে থাকবেন।
!
যখন আপনি শয়তানের কথা একটু শুনতে শুরু করলেন, তখন আপনি তাকে সামান্য ক্ষমতা দেওয়া শুরু করলেন। যখন আপনি তাকে একটু বেশী শুনতে শুরু করলেন, তখন তাকে আরও ক্ষমতা দেওয়া শুরু করলেন। আপনি যদি তাকে এইভাবে শুনতে থাকেন তাহলে সে আপনাকে তার কাজের আদেশ করতে শুরু করবে। আপনি যখন এই অবস্থার মধ্যে পড়বেন যে আপনি বলছেন আমি কোনভাবে নিজেকে বাঁচাতে পারছিনা, আমি জানিনা যে কে আমাকে দিয়ে এই সমস্ত খারাপ কাজ করায়? আমি জানিনা যে কে আমাকে এই সকল করতে উস্কানি দেয়? কি কারণে আমি সেখানে যাই আমি তাও জানিনা। সে আমাকে বলে যাও লগইন কর ভয়ংকর অশ্লীল ওয়েবসাইট গুলিতে আর নোংরা জিনিসগুলি দেখতে উস্কানি দেয়, কেন সে আমাকে দিয়ে এইগুলি করায়? কেন আমি শেষ পর্যন্ত এই কাজগুলি করছি? কেন আমি আমার চোখ নিচু করতে পারছিনা যখন আমি লিফটে উঠি? কেন আমি আমার চোখ নিচু করতে পারছিনা যখন আমি রাস্তা দিয়ে হেটে যাই? আমি নিজেকে কোনভাবেই সাহায্য করতে পারছিনা এমনকি আমাকে কি করতে হবে তাও জানিনা। তখনই বুঝবেন শয়তান আপনাকে ভালভাবেই ধরেছে, সে আপনাকে বেশ শক্তভাবেই ধরেছে, সে ক্রমাগত আপনাকে গ্রাস করে ফেলেছে আর এটা শুধু খারাপ থেকে আরও খারাপ হতে থাকবে। আপনি এই জটিল সমস্যার সমাধানও খুঁজছেননা আর এটা আপনার ভিতরের আধ্যাত্মিকতাকে একেবারেই ধংস করে দিবে। আল্লাহর সাথে আপনার সম্পর্ক পুরপোরি নির্ভর করে পরিষ্কার হৃদয় এর উপরে। যতবারই আপনি নষ্টামি কর্মের মুখোমুখি হবেন আরও বেশী ময়ালা, আরও বেশী কালিমা, আপনার অন্তরকে পুরপোরিভাবে ঢেকে দিবে। এটা শুধু স্রোতের মত বাড়তে থাকবে, সেই সময় যদি আপনার সামনে আল্লাহর কথা বলা হয় আপনার চোখ দিয়ে একফোটা পানিও পড়বেনা। এটা হবার কারণ হল ওইসব প্রকাশিত অশ্লীলতার দরুন আপনার হৃদয় পাপে সম্পুর্ণরুপে শক্ত হয়ে গেছে। আপনি যে গুনাহ'র কাজগুলি করার জন্য আপনার চোখ জোড়া ব্যবহার করেছেন। এমনকি আপনি আর এটার জন্য মোটেও পরোয়া করেননা।
!
আপনি জানেন যে একটি ভাল হৃদয় যখন সে দেখে কোন খারাপ কাজ ঘটে গেছে, যা কিনা আল্লাহর হুকুমের বাইরে তখন সে অস্থির হয়ে ওঠে। এটা তাকে আকৃষ্ট করেনা। এটা তাকে বিরক্তিবোধ করায়। সে বলে উঠে না এটা ভুল, সংগে সংগেই তার সতর্ক মন জেগে উঠে, বিপদসংকেত বেজে উঠে। কিন্তু যখনই আপনি এই অবস্থায় চলে যাবেন যে আপনার মধ্যে কোন গুনাহ করার পরেও কোন অপরাধবোধ কাজ করছেনা, আপনি শুধু মনে করছেন এটা কিছুইনা, আপনি এটাকে ভুল বলেই মনে করছেননা। যখন আপনি কোন মেয়ের দিকে তাকাচ্ছেন তখন আপনি শুধু এটাকেই পাত্তা দিচ্ছেন যে কেউ আমাকে দেখে ফেলল কিনা। যখন দেখবেন কেউ আপনাকে দেখছেনা তখনই আপনি মেয়েটার দিকে ভালভাবে তাকাবেন। এটার অর্থ হল আল্লাহর ভয় আপনার মন থেকে চলে গেছে, আপনি শুধু ভয় পান যে জিনিষ দেখা যায় তাকে, অদেখা শক্তিকে আপনি ভয় পাননা। আপনি আপনার মনের কু-প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছেন। এটা হল একটি ভয়ংকর আধ্যাত্মিক দুরঅবস্থা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন-
“তোমরা চোখের মাধ্যমে যে সামান্য চুরি করে দেখ এবং অন্তরের গোপন বিষয় সম্পর্কে তিনি জানেন।” ৪০/সূরা আল-মু’মিন, আয়াত- ১৯)
“আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি।” (৫০/ সূরা ক্বাফ,আয়াত- ১৬)
“আপনি কি তাকে দেখেন না, যে তারা মনের কু-প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে? তবুও কি আপনি দায়িত্ব নিবেন? আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে?” (সূরা আল ফুরকান, আয়াত-৪৩,৪৪)

অবশ্যই তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত আছে। সম্মানিত আমল লেখকবৃন্দ। তারা জানে যা তোমরা কর।” (৮২/সূরা ইনফিতার, আয়াত-১০,১১)
!
এই দুরাবস্থা থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে প্রকৃত মুমিনদের কাতারে শামীল হতে হবে। কারন প্রকৃত মুমিনদের উপর শয়তানের কোন কর্তৃত্ব নেই। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করার বিপরিতে তার আয়াতসমূহ এড়িয়ে যায় তার পিছনে শয়তান লেগে যায়। কারন অন্তর যখন কুরআন নিয়ে গভীর চিন্তা করে না সেই অন্তর যেন তালাবদ্ধ। সেই তালাবদ্ধ ও পরিত্যক্ত অন্তরে তখন প্রবেশ ঘটে শয়তানের এবং সে মনের আনন্দে নিষিদ্ধ কাজগুলো কেও আমাদের কাছে সুন্দর করে দেখায়। নিষিদ্ধ কাজগুলোকে তখন আর অসুন্দর লাগে না, মনে হয় "ইশ্! কি সুন্দর! ইশ্! কি আনন্দ!" মনে রাখবেন, পাপাসক্ত অন্তর কখনো পবিত্র ভালোবাসার সৌন্দর্যকে অনুভব করতে পারে না। যদি ফিরে পেতে চান হৃদয়ের শান্তি, যদি অনুভব করতে চান প্রিয়জনদের ভালোবাসা। আপনাকে শয়তানের ধোঁকা থেকে বেঁচে থেকে নিজের নফসের পশুত্বকে কুরবানি দিয়ে ফিরে আসতেই হবে। অবশ্যই পরকালীন জীবনের সাফল্যের আশায় আল্লাহকে যথাসাধ্য ভয় করতে হবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন-
“যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং খেয়াল-খুশী থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রেখেছে, তার ঠিকানা হবে জান্নাত।” (সূরা আন নাযিয়াত, আয়াত ৩৫-৪১)
“অবশ্যই যারা আমার প্রকৃত মুমিন বান্দা হবে তাদের ওপর তোমার (শয়তান) কোন জোর খাটবে না। তোমার জোর খাটবে শুধুমাত্র এমন বিপথগামীদের ওপর যারা তোমার অনুসরণ করবে।” ১৫/সূরা আল-হিজর, আয়াত-৪২)
“কিন্তু সে তা (আমার আয়াতসমূহ) এড়িয়ে

মন্তব্যসমূহ

Ad Code

Responsive Advertisement